Register

Win 10.00$

মহিমাময় রমজানের ফযীলত

Be the first to comment!

বছরের চাকা ঘুরে আমাদের মাঝে মুক্তির বার্তা নিয়ে আবারও আসছে মাহে রমজান। আত্মশুদ্ধি, আত্মসংযম ও আত্মোৎসর্গের মাস রমজান। রহমত,বরকত,মাগফিরাতের উর্বর মওসুমে আমরা সকলেই উপনীত। মহান আল্লাহ তা’য়ালা অত্যন্ত দয়া পরবশ হয়ে আমাদের দান করেছেন পুণ্যে ভরা মওসুম, অসীম রহমত ও সীমাহীন বরকত পবিত্র রমজানুল মোবারক। আল্লাহ তা’য়ালার নিয়ম অনুযায়ী কোন মাসকে অন্য মাসের উপর কোন দিবসকে অন্য দিবসের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছেন। আর পবিত্র রমজানুল মোবারক হল উৎকৃষ্ট মাসের মধ্যে অন্যতম একটি মাস। এ মাসে রাত-দিন সর্বদা আমাদের উপর রহমত বর্ষিত হতে থাকে। আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাস হচ্ছে মাহে রমজান। এই মাসে কোরআন নাযিল হয়েছে। এই মাসে অনেক যুদ্ধ-বিগ্রহ সংঘটিত হয়েছিল। এই মাসের অনেক গুরুত্ব ও তাৎপর্য রয়েছে।
রমজান শব্দের বিশ্লেষন: রমজান শব্দটি আরবি। “রমযুন” শব্দ থেকে উৎগত হয়েছে। শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, জ্বালিয়ে দেওয়া, ভষ্মীভুত হওয়া। যেহেতু রোযা পালনের মাধ্যমে মানুষের মনের ক্রোধ, কু-প্রবৃত্তি, হিংসা-বিদ্বেষ সব কিছু ভষ্মীভুত হয়ে যায়, তাই রোযার এ মাসকে রমজান মাস বলা হয়। রমজান যেহেতু সিয়াম সাধনার মাস তাই প্রথমে সাওম সম্পর্কে জানার দরকার। রোযা হচ্ছে ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের মধ্যে অন্যতম একটি স্তম্ভ। রোযার শাব্দিক অর্থ হচ্ছে, বিরত থাকা। পরিভাষায় রোযা বলা হয় মহান আল্লাহর ফরয নির্দেশ পালনের উদ্দেশ্যে সওয়াবের প্রত্যাশায় সুুবহে ছাদেক থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাওয়া-দাওয়া ও যাবতীয় পানাহার, স্ত্রীর সঙ্গে সহবাস তথা যৌনাচার ইত্যাদি প্রভৃতি হতে বিরত থাকাকেই রোযা বলে।
কখন রোযা ফরয: মহান আল্লাহ তা’য়ালা দ্বিতীয় হিজরী সনে ‘মদীনাতুল মুকাররামা শরীফে’ শা’বান মাসে রমজান মাসের রোযা ফরয করেছেন।
রোযার ফযিলত: রোযার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। মহান আল্লাহ তা’য়ালা কোরআন কারীমে ইরশাদ করেন, “হে ইমানদারগন! তোমাদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছে যে ভাবে তোমাদের পূর্ববর্তীদের উপর রোযা ফরয করা হয়েছিল, যাতে করে তোমরা মুত্তাকি হতে পার”। সুরা বাকারা-১৮৪। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন বলেন, “আসসাওমু-লী ওয়া আনা আযজী” অর্থাৎ রোযা আমার জন্য এবং আমি তার প্রতিদান দেব। হযরত সালমান ফারসী (রা:) হতে বর্ণিত তিনি বলেছেন মহানবী (সা:) শা’বান মাসের শেষ দিন আমাদেরকে সম্বোধন করে ইরশাদ করেন, “ এ লোক সকল! তোমরা ভাল করে মনযোগ দিয়ে শুনে রাখ, তোমাদের সামনে এমন একটি মাস সমাগত। যে মাস মহা পবিত্র, রহমত-বরকত ও নাজাতে ভরপুর। এই মাসের রোযাকে আল্লাহ তা’য়ালা তোমাদের উপর ফরয করেছেন। যে লোক এই মাসে আল্লাহর সন্তোষ ও তার নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে রোযা রাখবে আল্লাহ তার পূর্ববর্তী সমস্ত গোনাহ মাফ করে দিবেন।- বুখারী শরীফ। যে ব্যক্তি এ মাসে একটি ফরয আদায় করবে সে সত্তর টি ফরযের সওয়াব পাবে, আর যে ব্যক্তি একটি সুন্নাত আদায় করবে সে একটি ফরযের সওয়াব পাবে, আর যে একটি নফল আদায় করবে সে একটি সুন্নাতের সওয়াব পাবে। এই মাসে আল্লাহ তা’য়ালা পূর্ণকে বর্ধিত করতে থাকেন। এই মাসে যে ব্যক্তি কোন রোযাদারকে ইফতার করাবে আল্লাহ তা’য়ালা তার গুনাহ মাফ করে দিবেন, আর সে ব্যক্তিকে রোযাদারের সওয়াব দিবেন। কিন্তু সে জন্য প্রকৃত রোযাদারের সওয়াবের মধ্যে কোন কমতি করা হবে না। মহা নবী (সা:) এরশাদ করেন, “আসসাওমু জুন্নাতুন মিনাননার” অর্থাৎ রোযা প্রকৃত ঈমানদারের জন্য ঢাল সরূপ। -মিশকাত শরীফ। অর্থাৎ জিহাদের ময়দানে ঢাল যে ভাবে শত্রুর আক্রমন থেকে বাঁচাতে পারে ঠিক সেভাবে রোযাও মানুষকে আখেরাতে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে পারবে। মহানবী (সা:) এরশাদ করেন, “রমজান মাসের প্রথম রাত উপনীত হলেই মহান আল্লাহ তা’য়ালা শয়তান ও দুষ্ট জ্বীনগুলোকে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখেন। জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেন এবং জান্নাতের দরজা খুলে দেন।- তিরমিযি শরীফ। হযরত সাহল (রা:) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা:) ইরশাদ করেন কিয়ামতের দিন রোযাদারদের জন্য বেহেশতের একটি দরজা “রাইহান” যা দিয়ে তাদেরকে সর্ব প্রথম প্রবেশ করতে দেওয়া হবে। রোযাদার ছাড়া আর কেউ উক্ত দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। -তিরমিযি শরীফ। হযরত আবু হুরায়রা (রা:) হইতে বর্ণিত নবী করিম (সা:) ইরশাদ করেন, “ রোযাদারের মুখের দূর্গন্ধ আল্লাহর নিকট মেশকে আম্বরের সুগন্ধের চেয়েও অনেক উৎকৃষ্ট”। -বুখারী শরীফ। রাসুল (সা:) বলেন “রোযাদারের জন্য দুইটি আনন্দ রয়েছে, একটি হচ্ছে, ‘ইফতারের সময়’ অপরটি হচ্ছে, পরকালে তার ‘প্রভূর সাথে সাক্ষাতের সময়’।
লেখক: প্রবন্ধকার,ও কলাম লেখক।

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

Post a Comment

ads

Contact Form

Name

Email *

Message *

ads

Win 10.00$