রমজান শেষের পথে। রমজানের চূড়ান্ত প্রাপ্তি সময় অতিবাহিত হচ্ছে। রমজানের অন্যতম আকর্ষণ লাইলাতুল কদর। এ লাইলাতুল কদর প্রাপ্তিতে মুসলিম উম্মাহর জন্য রমজানের শেষ দশকের ইবাদাতের ১০টি টিপস তুলে ধরা হলো-
১. বছরের সেরা ১০ রাতের ইবাদাত:-
রমজানের শেষ দশকের প্রত্যেকটি কাজকে আল্লাহ তাআলা উদারভাবে দেখবেন এবং অনেক বেশি সাওয়াব দিবেন। তাই প্রত্যেকের উচিত, রমজানের শেষ দশকের উত্তম সুযোগ নিয়ে সময় অপচয় না করে ইবাদাতে মনোযোগী হওয়া। যদিও অলসতা ও একঘেয়েমী মানুষকে ইবাদাত বন্দেগি করতে বাধা দেয়। যারা রমজানের প্রথম দুই দশক ইবাদাত-বন্দেগি করে আল্লাহর নৈকট্য অর্জনে সক্ষম না হয়; তাদের জন্য শেষ দশকের প্রতিটি রাতে গভীর মনোযোগী হয়ে ইবাদাত করে আবশ্যক।
২. বিশেষ দোয়ার মাধ্যমে ইবাদাত:-
শেষ দশকের রজনীতে এ দোয়া বেশি বেশি পড়া। যা বিশ্বনবি হজরত আয়িশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে শিখিয়েছেন। আর তা হলো- আল্লাহুম্মা ইন্নাকা আফুওয়ুন, তুহিব্বুল আফওয়া, ফা`ফু আন্নি। অর্থাৎ হে আল্লাহ আপনি ক্ষমাশীল। ক্ষমা করাকে ভালো বাসেন, সুতরাং আমাকে ক্ষমা করে দিন।
৩. সঠিকভাবে লাইলাতুল কদর তালাশ করা:-
রমজানের শেষ দশকের বিজোড় রাতে লাইলাতুল কদর তালাশ করতে থাকা। কারণ লাইলাতুল কদর হলো হাজার মাসের চেয়ে উত্তম। এ রাতের ইবাদাত সমান হাজার মাসের ইবাদাতের সমান। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি লাইলাতুল কদরের রাতে বিশ্বাস ও পুরস্কারের আশায় ইবাদাতরত অবস্থায় থাকবে, আল্লাহ তাআলা তার অতীতের সব গোনাহ মাফ করে দিবেন। (বুখারি)
৪. দোয়ার একটি লিস্ট তৈরি করে অন্তরে রাখা:-
শেষ দশকের বিজোড় রাতে আল্লাহর কাছে ন্যায়ের পথে চলা এবং অন্যায় পথ থেকে বিরত থাকতে নিজের জন্য, পরিবারের জন্য, আত্মীয়-স্বজনের জন্য তথা নির্যাতিত মুসলিম উম্মাহর জন্য দোয়া করতে একটি লিস্ট তৈরি করা। যাতে ইবাদাতের সময় সহজে সবার জন্য দোয়া করা যায়।
৫. রাতের ইবাদাতের জন্য দিনের বেলায় ঘুমানো:-
রমজানের শেষকের প্রতিটি রাতই মুসলিম উম্মাহর জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। ইবাদাতের উদ্দেশ্যে লাইলাতুল কদর প্রাপ্তির জন্য রাত জেগে ইবাদাতের বিকল্প নেই। তাই রাতের ইবাদাতের জন্য দিনের বেলায় বিশ্রাম গ্রহণ করা।
৬. সামাজিক নেটওয়ার্ককে এড়িয়ে চলা:-
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুক, টুইটার, ইনস্টাগ্রামসহ সকল মাধ্যমে অপ্রয়োজনী কাজে অযথা সময় ব্যয় না করে ইবাদাত-বন্দেগিতে বেশি মনোযোগী হওয়া।
৭. কুরআন তিলাওয়াত বৃদ্ধি করা:-
কুরআনুল কারিম পড়ার সময় বুঝে বুঝে তিলাওয়াত করা উত্তম। কুরআনের মর্মার্থ অনুধাবনে রয়েছে সবচেয়ে বেশি সাওয়াব। কুরআনের অর্থ না বুঝলেও শুধুমাত্র তিলাওয়াতেও রয়েছে অনেক সাওয়াব। তাই বেশি বেশি কুরআন তিলাওয়াত করা। মাঝে মাঝে সুবহানাল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ, আল্লাহু আকবার ইত্যাদি জিকির মুখে রাখা।
৮. ধের্য্য মাধ্যমে ইবাদাত করা:-
লাইলাতুল কদর প্রতি বছর একদিন হয়। রমজানের এ শেষ দশককে নিজের জীবনের জন্য চূড়ান্ত সময় ভেবে ধৈর্য সহকারে ইবাদাত-বন্দেগিতে মনোযোগী হওয়া। এ কথা মনে করে ইবাদাত করা যে, এ রমজানের শেষ দশকই তোমার জীবনের শেষ দশক।
৯. দান অনুদান দেয়া:-
শেষ দশকের রাতে নামাজ, জিকির-আজকার, তিলাওয়াত ও অন্যান্য ইবাদাতের পাশাপাশি গরিব-দুঃখীর মাঝে আল্লাহর ওয়াস্তে দান-খয়রাত করা। ইয়াতিম মিসকিনদের সাধ্যানুযায়ী সহায়তা করা।
১০. ইবাদাতে অনুপ্রাণিত করা:-
রমজানের শেষ দশকের রাতে পরিবার, বন্ধু ও সম্প্রদায়ের লোকদের মাঝে ইবাদাতে প্রতিযোগিতা করার মানসিকতা তৈরি করা। ইবাদাতের অনুপ্রেরণা দেয়া।
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে লাইলাতুল কদর প্রাপ্তিতে ইবাদাত-বন্দেগি করার তাওফিক দান করুন। আমিন।
Post a Comment