হযরত জাবের থেকে বর্ণিত আছে যে, আমরা রাসূল(সা) এর সঙ্গে যাতুর রিকাব অভিযানে গিয়েছিলাম।
একটি ছায়াদার বৃক্ষ দেখে সেখানে রাসূল(সা) বিশ্রাম করতে লাগলেন। আর আমরা কিছু দূরে অবস্থান করতে লাগলাম। সহসা শত্রুপক্ষীয় একজন মোশরেক রাসূল(সা) এর কাছে এল।
এ সময়ে রাসূল(সা) ঘুমন্ত ছিলেন এবং তাঁর তরবারী গাছের সাথে ঝুলছিল। সে এসেই রাসূলুল্লাহর(সা) তরবারী হাতে নিয়ে বললো, হে মুহাম্মদ! এখন তোমাকে আমার হাত হতে কে রক্ষা করবে?
রাসূল(সা) নির্ভীকভাবে দৃপ্ত কন্ঠে উত্তর দিলেন, আল্লাহ। এ কথা শোনামাত্র লোকটির হাত থেকে তরবারী খসে পড়ল।
অমনি রাসূল(সা) তরবারী তুলে নিলেন।
তিনি সঙ্গে সঙ্গে তাকে জিজ্ঞাসা করলেনঃ বল, এখন কে তোমাকে আমার হাত হতে রক্ষা করবে? সে বললোঃ আপনি মহানুভবতা প্রদর্শন করুন।
রাসূল(সা) বললেনঃ তুমি কি সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত আছ যে, আল্লাহ ছাড়া আর কোনো মা’বুদ নেই এবং আমি তাঁর রাসূল।
সে বললোঃ না। তবে আমি ওয়াদা করছি যে, আমি কখনো আপনার সাথে যুদ্ধ করবো না এবং আপনার শত্রুদের সঙ্গী হয়ে যুদ্ধ করতে আসবো না।
রাসূল(সা) তাকে মুক্ত করে দিলেন। সে চলে গেল। নিজ গোত্রের কাছে গিয়ে সে বললোঃ আমি মুহাম্মদের(সা) সাথে সাক্ষাত করে এলাম। পৃথিবীতে তার চেয়ে উত্তম মানুষ আর নেই।
শিক্ষাঃ
(১) আল্লাহর প্রতি দৃঢ় ঈমান, অবিচল নির্ভরতা ও সৎসাহস মুমিন ব্যক্তির সবচেয়ে বড় অস্ত্র।
(২) নাগালে পেয়েও শত্রুর প্রতি মহানুভবতা ও ক্ষমা প্রদর্শন ইসলামের দাওয়াত দাতাদের সবচেয়ে মূল্যবান গুণ। এ দ্বারা মানুষের হৃদয় জয় করা যায়।
(৩) শত্রুকে সব সময় স্বমতে দীক্ষিত করার আশা করা ঠিক নয়।
কখনো কখনো তার শত্রুতার তীব্রতা হ্রাস পাওয়াকেই যথেষ্ট মনে করা উচিত। তাকে সংঘর্ষের পথ থেকে সরাতে পারাও একটি উল্লেখযোগ্য সাফল্য।
Post a Comment