Register

Win 10.00$

‘মানুষের সঙ্গে কথা বলুন উত্তম ভাষায়’

Be the first to comment!

আল্লাহ তাআলা কুরআনুল কারিমের সুরা বাকারার ৮৩ নং আয়াতে ঘোষণা করেন, ‘তোমরা মানুষের সঙ্গে উত্তম ভাষায় কথা বল।’ মানুষ মনের ভাব বিনিময়ে ‘কথা’ বলে থাকে। এ ভাব বিনিময়ের সময় মানুষ বাকশক্তির অপব্যবহার করে থাকে। যা কোনো ভাবেই কাম্য নয়।

মানুষ যাতে কথা বলার সময় সংযত ও শালীন থাকে, ভালো ও উত্তম কথা বলে; সে কারণেই আল্লাহ তাআলা নামাজ-রোজার মতো কথা বলার ক্ষেত্রেও কুরআনুল কারিমে আয়াত নাজিল করে বলেছেন- কথা বলার সময় যেন মানুষ উত্তম ভাষায় কথা বলা।

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কথা বলার ক্ষেত্রে এর সঠিক ব্যবহারকারীর জন্য জান্নাতের নিশ্চয়তা প্রদান করেছেন। হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি আমাকে তাঁর জিহ্বা ও লজ্জাস্থানের হেফাজতের নিশ্চয়তা দান করবে; আমি তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দান করবো।
হজরত সুফিয়ান সাওরি রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘মানুষের সাথে উত্তম কথা বলার মানে হচ্ছে, ‘মানুষকে ভালো কথা বলতে থাক; মন্দ কথা থেকে নিজেকে বিরত রাখ; পরস্পর বিনম্র ব্যবহার কর এবং বিনম্র ভাষায় কথা বল। (তাফসিরে ইবনে আব্বাস)

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কথা বলার ক্ষেত্রে সতর্কতা জারি করে বলেছেন, ‘কোনো ব্যক্তির মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এ টুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শুনে তা (সত্যতা যাচাই-বাচাই না করে) বলে বেড়ায়।

তাই কোনো কথা বলার সময় এ কথা স্মরণ রাখতে হবে যে, তার কথার দ্বারা যেন সাওয়াব লাভ হয়। সুতরাং আল্লাহর হুকুম অনুযায়ী কথা বলার সময় কিছু বিষয়ের প্রতি লক্ষ্য রাখা আবশ্যক।

>> মানুষ যখন কথা বলবে, অবশ্যই ভালো কথা বলবে। যে কথা বললে মানুষের নেকি অর্জন হয়। যে সব কথা বললে গোনাহ মাফ হয়। যে সব কথা বললে দুনিয়ার ক্ষতি হয় না বরং পরকালের পথ সুগম হয়।

>> মানুষের সঙ্গে ভালো ও উত্তম কথা বলার ধরণও হবে ভালো। সুন্দর মার্জিত দরদ মিশানো ভাষঅয় কথা বলতে হবে। যাতে মার্জিত ও দরদমাখা কথায় মানুষ দুনিয়া পরকালের কল্যাণে মায়া-মমতায় ও ভালোবাসায় সে কথাগুলোকে গ্রহণ করতে পারে। কেননা রুক্ষ ও কর্কষ কণ্ঠের কথা যত ভালোই হোক; মানুষ সে কথার প্রতি আমলে আগ্রহী হয় না বা সে কথা শুনতে চায় না।

>> ভালো কথা বা উত্তম নসিহত করতে হবে ভালো উদ্দেশ্যে নিয়ে। যেখানে লোভ, হিংসা, ভয় বা দুনিয়ার কোনো স্বার্থ থাকবে না। তবে পরকালের কল্যাণ লাভের নিয়তে দুনিয়ার উপকারেও ভালো কথা বলা যাবে। তবে নিয়ত থাকতে হবে সঠিক।

>> সর্বোপরি ভালো কথা বলার সময় প্রত্যেককেই বিনম্র ও শালীন হতে হবে। তবেই মানুষের কথা হবে গ্রহণযোগ্য।

বিশেষ করে-
এমন কোনো কথা বলা যাবে না, যা শুনতে ভালো লাগে কিন্তু হাসিঠাট্টা, কৌতুকসহ অযথা বেশি বেশি রসালো কথা বললে তা হবে গোনাহের কারণ। আর কথা বেশি হলে সেখানে মিথ্যা ও গিবতের আশংকা থাকে। তাই বেশি কথা বলা পরিহার করতে হবে।

কথা বলায় ইসলামের সুমহান আদর্শ হলো- মানুষ মুসলিম হোক কিংবা বিধর্মী হোক, সবার সঙ্গে উত্তম কথার দ্বারা ভাব বিনিময় করা। যার প্রমাণ রয়েছে পবিত্র কুরআনুল কারিমে-
আল্লাহ তাআলা ফিরাউনের সঙ্গে উত্তম ভাব ও ভাষার দ্বারা দ্বীনের কথা বলার জন্য; তাওহিদের দাওয়াদ দেয়ার জন্য হজরত মুসা আলাইহিস সালামের সঙ্গে তাঁর ভাই হারুন আলাইহিস সালামকে অনেক শ্রুতি মধুর করে পাঠিয়েছিলেন। এবং বিনম্রভাবে কথা বলার নির্দেশ দিয়ে বলেন, ‘তোমরা উভয়েই ফিরউনের সাথে বিনম্রভাবে কথা বলবে।’ আর আল্লাহর বাণী প্রচারের ক্ষেত্রে উত্তম কথার বিকল্প নাই।

পরিশেষে...
মানুষ দ্বীন ও দুনিয়ার বিভিন্ন প্রয়োজনে পরস্পরের সহিত কথা-বার্তা বা ভাব বিনিময় করে থাকে। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে কুরআনের নির্দেশিত পন্থায় তাঁর বিধি-বিধান বাস্তবায়নে মানুষের সঙ্গে উত্তম ভাষায় কথা বলার তাওফিক দান করুন। আমিন।

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

Post a Comment

ads

Contact Form

Name

Email *

Message *

ads

Win 10.00$