Register

Win 10.00$

সুন্নাহ উপেক্ষার পরিণাম

Be the first to comment!

মানবতার হেদায়াতের জন্য মহান আল্লাহ যুগে যুগে নবী-রাসূলগণকে প্রেরণ করেছেন। তাঁদের মধ্যে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ হ’লেন মুহাম্মাদ (ছাঃ)। তাঁর উম্মত তথা মুসলিম জাতিকে হেদায়াতের জন্য মহাগ্রন্থ আল-কুরআন দান করেছেন। হাদীছ বা সুন্নাত হচ্ছে কুরআনের নির্ভুল ব্যাখ্যা। কুরআন সঠিকভাবে বুঝে সে অনুযায়ী আমল করতে হ’লে হাদীছ বা সুন্নাহর কোন বিকল্প নেই। সুতরাং মুমিন জীবনে সুন্নাহর গুরুত্ব অপরিসীম। পক্ষান্তরে সুন্নাতকে উপেক্ষা করা, তাকে অবজ্ঞা-অবহেলা ভরে প্রত্যাখ্যান করা রাসূল (ছাঃ)-কে প্রত্যাখ্যান করার নামান্তর। এহেন গর্হিত কাজের পরিণাম অত্যন্ত ভয়াবহ। আলোচ্য নিবন্ধে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হ’ল।
মুসলিম হওয়ার জন্য কুরআন মেনে চলা যেমন আবশ্যক, তেমনি সুন্নাহ মেনে চলাও অপরিহার্য। সুন্নাহকে বাদ দিয়ে কুরআন অনুসরণ করা অসম্ভব। তেমনিভাবে সুন্নাহকে উপেক্ষা করলে পরকালে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হ’তে হবে। এ সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হ’ল।-
১. আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের পরিপন্থী :
পবিত্র কুরআন ও ছহীহ হাদীছ পাওয়ার পর তা উপেক্ষা করে যদি কেউ নিজের রায়কে প্রাধান্য দেয়, তাহ’লে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের পরিপন্থী হবে। রাসূলের সুন্নাহকে পিছনে ফেলে অসম্মান করা, আল্লাহর আদেশের খেলাফ করার নামান্তর, যা হারাম।
মহান আল্লাহ বলেন, ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮْﺍ ﻻَ ﺗُﻘَﺪِّﻣُﻮْﺍ ﺑَﻴْﻦَ ﻳَﺪَﻱِ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟِﻪِ ﻭَﺍﺗَّﻘُﻮﺍ ﺍﻟﻠﻪَ ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺳَﻤِﻴْﻊٌ ﻋَﻠِﻴْﻢٌ، ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮْﺍ ﻻَ ﺗَﺮْﻓَﻌُﻮْﺍ ﺃَﺻْﻮَﺍﺗَﻜُﻢْ ﻓَﻮْﻕَ ﺻَﻮْﺕِ ﺍﻟﻨَّﺒِﻲِّ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের সামনে অগ্রণী হয়ো না। আর আল্লাহকে ভয় কর, নিশ্চয়ই আল্লাহ সর্বশ্রোতা ও সর্বজ্ঞ। হে ঈমানদারগণ! তোমরা নবীর কন্ঠস্বরের উপর তোমাদের কন্ঠস্বর উচুঁ করো না’ (হুজুরাত ৪৯/১-২)। ‘নবীর কন্ঠস্বর’ হ’ল তাঁর রেখে যাওয়া সুন্নাত। এই সুন্নাহকে অমান্য, অস্বীকার, পরিবর্তন, পরিমার্জন, পরিবর্ধন ও সংশোধনের নিমিত্তে যে সকল অপচেষ্টা সব কিছুই তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র। সুতরাং এই কন্ঠরোধ করার অর্থ হ’ল রাসূলে কথা তথা আল্লাহর অহী দুনিয়া থেকে নিশ্চিহ্ন করে ফেলার সুপ্ত ষড়যন্ত্র।
সর্বপ্রথম আল্লাহ ও তাঁর বিধান কুরআন এবং তারপর রাসূল (ছাঃ) ও তাঁর সুন্নাহর আনুগত্য করতে হবে। অপরদিকে রাসূলের আনুগত্য ব্যতীত আল্লাহর সান্নিধ্য অসম্ভব। আল্লাহ ও রাসূলের সম্পর্ক সম্পূরক। যেমন আল্লাহ বিধানদাতা ও রাসূল বিধানের ব্যাখ্যাদাতা ও পথ প্রদর্শক। তাই আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য মুমিন ব্যক্তির প্রধান বৈশিষ্ট্য। মহান আল্লাহ বলেন, ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮْﺍ ﺃَﻃِﻴْﻌُﻮﺍ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﺃَﻃِﻴْﻌُﻮﺍ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮْﻝَ ‘হে ইমানদারগণ! তোমরা আনুগত্য কর আল্লাহর, আনুগত্য কর রাসূলের’ (নিসা ৪/৫৯)। অন্যত্র তিনি বলেন, ﻣَﻦْ ﻳُﻄِﻊِ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮْﻝَ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﻃَﺎﻉَ ﺍﻟﻠﻪَ
‘যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করে, সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল’ (নিসা ৪/৮০)। তিনি আরো বলেন, ﻭَﺃَﻃِﻴْﻌُﻮﺍ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﺍﻟﺮَّﺳُﻮْﻝَ ﻟَﻌَﻠَّﻜُﻢْ ﺗُﺮْﺣَﻤُﻮْﻥَ
‘আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য কর, যাতে তোমরা অনুগ্রহ প্রাপ্ত হও’ (আলে ইমরান ৩/১৩২)।
রাসূলের আনুগত্য হ’ল আল্লাহর আনুগত্য। এ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ﻓَﻤَﻦْ ﺃَﻃَﺎﻉَ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﻃَﺎﻉَ ﺍﻟﻠﻪَ، ﻭَﻣَﻦْ ﻋَﺼَﻰ ﻣُﺤَﻤَّﺪًﺍ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻓَﻘَﺪْ ﻋَﺼَﻰ ﺍﻟﻠﻪَ ‘যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর আনুগত্য করল, সে যেন আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি মুহাম্মাদ (ছাঃ)-এর অবাধ্যতা করল, সে যেন আল্লাহরই অবাধ্যতা করল’। [11] অন্যত্র তিনি বলেন, ﻓَﻤَﻦْ ﺭَﻏِﺐَ ﻋَﻦْ ﺳُﻨَّﺘِﻰْ ﻓَﻠَﻴْﺲَ ﻣِﻨِّﻰ ‘যে ব্যক্তি আমার সুন্নাত হ’তে মুখ ফিরিয়ে নিল, সে আমার দলভুক্ত নয়’। [12]
রাসূলের সুন্নাহ তথা হাদীছের অনুসরণকে ওয়াজিব করে আল্লাহ কুরআনের অন্যূন ৪০ জায়গাতে বর্ণনা করেছে। [13] আক্বীদা ও আহকাম সকল বিষয়ে হাদীছ হ’ল চূড়ান্ত সিদ্ধান্তদানকারী।[14] হাদীছের অনুসরণ ব্যতীত ইসলামের অনুসরণ কল্পনা করা যায় না। সুতরাং রাসূল (ছাঃ) আমাদের সম্মুখে যে সুন্নাত পেশ করেছেন, তা কোনরূপ বিকৃত ও বিরোধিতা না করে সঠিকভাবে গ্রহণ করা ওয়াজিব। মহান আল্লাহ বলেন, ﻭَﻣَﺎ ﺁﺗَﺎﻛُﻢُ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮْﻝُ ﻓَﺨُﺬُﻭْﻩُ ﻭَﻣَﺎ ﻧَﻬَﺎﻛُﻢْ ﻋَﻨْﻪُ ﻓَﺎﻧْﺘَﻬُﻮْﺍ‘আর রাসূল তোমাদের যা দেন তোমরা তা গ্রহণ কর এবং যা কিছু নিষেধ করেন, তা থেকে বিরত থাক’ (হাশর ৫৯/৭)।
সুন্নাহর বিরোধিতা ও তা বিকৃত করা কুফরী (আলে ইমরান ৩/৩২)। তাছাড়া পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ পৃথিবীর সকল মুমিন বান্দার জন্যে আমানত স্বরুপ। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ﺃَﻥَّ ﺍﻷَﻣَﺎﻧَﺔَ ﻧَﺰَﻟَﺖْ ﻓِﻰ ﺟَﺬْﺭِ ﻗُﻠُﻮْﺏِ ﺍﻟﺮِّﺟَﺎﻝِ، ﺛُﻢَّ ﻋَﻠِﻤُﻮْﺍ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﻘُﺮْﺁﻥِ، ﺛُﻢَّ ﻋَﻠِﻤُﻮْﺍ ﻣِﻦَ ﺍﻟﺴُّﻨَّﺔِ
‘নিশ্চয়ই আমানতকে মানুষের মূল অন্তঃকরণে নাযিল করা হয়েছে। অতএব তোমরা শিক্ষা গ্রহণ কর কুরআন হ’তে। অতঃপর শিক্ষা গ্রহণ কর সুন্নাত হ’তে। [15]
পার্থিব জীবনের সকল কর্মে কুরআন ও সুন্নাহর ফায়ছলা মেনে চলা ওয়াজিব। মহান আল্লাহ বলেন, ﺇِﻧَّﻤَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﻗَﻮْﻝَ ﺍﻟْﻤُﺆْﻣِﻨِﻴْﻦَ ﺇِﺫَﺍ ﺩُﻋُﻮْﺍ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟِﻪِ ﻟِﻴَﺤْﻜُﻢَ ﺑَﻴْﻨَﻬُﻢْ ﺃَﻥْ ﻳَﻘُﻮْﻟُﻮْﺍ ﺳَﻤِﻌْﻨَﺎ ﻭَﺃَﻃَﻌْﻨَﺎ ﻭَﺃُﻭْﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻤُﻔْﻠِﺤُﻮْﻥَ ‘মুমিনদের মধ্যে কোন ব্যাপারে ফায়ছালা করার জন্যে যখন তাদেরকে আল্লাহ ও রাসূলের (কুরআন ও সুন্নাহর) দিকে আহবান করা হয়, তখন তারা বলে, আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম। বস্ত্ততঃ তারাই হ’ল সফলকাম’ (নূর ২৪/৫১) । ছাহাবীগণ রাসূল (ছাঃ)-এর সুন্নাতকে সসম্মানে মেনে চলতেন। তার প্রমাণ রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন মু‘আয ইবনে জাবাল (রাঃ)-কে ইয়েমেনের শাসনকর্তা নিযুক্ত করে পাঠান, তখন মু‘আয বলেন, ‘আমি আল্লাহর কিতাব ও সুন্নাত দ্বারা ফায়ছালা করব’ (দারেমী) । যে কুরআন ও হাদীছের নিদ্ধান্ত মেনে না নেয়, সে মুনাফিক। দুনিয়াতে তার উদাহরণ ছিদ্র হওয়া পাত্রের মত, যতই পানি ভরার চেষ্টা করে, তা পূর্ণ হয় না। অনুরূপভাবে তার আমলে ছালেহ বা নেক আমল নষ্ট হয়ে যায়।
২. আমলে ছালেহ বিনষ্ট হওয়া :
আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের পরিপন্থী আমল করলে অর্থাৎ পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহ্কে অবমাননা করার ফলে উত্তম আমলগুলো বিনষ্ট হয়ে যায়। যদিও মানুষ ভাবে যে, সে দুনিয়ার বুকে ভাল আমল করে চলেছে। অথচ সে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের বিরাগ ভাজন হচ্ছে। এ সম্পর্কে মহান আল্লাহ বলেন, ﻳَﺎ ﺃَﻳُّﻬَﺎ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﺁﻣَﻨُﻮْﺍ ﺃَﻃِﻴْﻌُﻮﺍ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﺃَﻃِﻴْﻌُﻮﺍ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮْﻝَ ﻭَﻻَ ﺗُﺒْﻄِﻠُﻮْﺍ ﺃَﻋْﻤَﺎﻟَﻜُﻢْ ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য কর এবং স্বীয় আমল বিনষ্ট কর না’ (মুহাম্মাদ ৪৭/৩৩)। তিনি আরো বলেন, ﻗُﻞْ ﻫَﻞْ ﻧُﻨَﺒِّﺌُﻜُﻢْ ﺑِﺎﻟْﺄَﺧْﺴَﺮِﻳْﻦَ ﺃَﻋْﻤَﺎﻻً، ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﺿَﻞَّ ﺳَﻌْﻴُﻬُﻢْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺤَﻴَﺎﺓِ ﺍﻟﺪُّﻧْﻴَﺎ ﻭَﻫُﻢْ ﻳَﺤْﺴَﺒُﻮْﻥَ ﺃَﻧَّﻬُﻢْ ﻳُﺤْﺴِﻨُﻮْﻥَ ﺻُﻨْﻌًﺎ
‘তুমি বল, আমি কি তোমাদেরকে ক্ষতিগ্রস্ত আমলকারীদের সম্পর্কে খবর দিব? দুনিয়ার জীবনে যাদের সমস্ত আমল বরবাদ হয়েছে। অথচ তারা ভাবে যে, তারা সুন্দর আমল করে যাচ্ছে’ (কাহ্ফ ১৮/১০৩-১০৪)। অন্যত্র তিনি বলেন, ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﻜْﻔُﺮْ ﺑِﺎﻟْﺈِﻳْﻤَﺎﻥِ ﻓَﻘَﺪْ ﺣَﺒِﻂَ ﻋَﻤَﻠُﻪُ ﻭَﻫُﻮَ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺂﺧِﺮَﺓِ ﻣِﻦَ ﺍﻟْﺨَﺎﺳِﺮِﻳْﻦَ ‘যে ব্যক্তি বিশ্বাসের বিষয় (কুরআন-সুন্নাহ) অস্বীকার করে, তার সকল শ্রম বিফলে যাবে এবং পরকালে সে ক্ষতিগ্রস্ত হবে’ (মায়েদা ৫/৫)। আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, ﺇِﻥَّ ﺍﻟﻠﻪَ ﺧَﺒِﻴْﺮٌ ﺑِﻤَﺎ ﺗَﻌْﻤَﻠُﻮْﻥَ ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের আমল সম্পর্কে অবগত আছেন’ (নূর ২৪/৫৩)। তিনি আরো বলেন, ﻓَﺎﺳْﺘَﻘِﻢْ ﻛَﻤَﺎ ﺃُﻣِﺮْﺕَ ﻭَﻣَﻦْ ﺗَﺎﺏَ ﻣَﻌَﻚَ ﻭَﻻَ ﺗَﻄْﻐَﻮْﺍ ﺇِﻧَّﻪُ ﺑِﻤَﺎ ﺗَﻌْﻤَﻠُﻮْﻥَ ﺑَﺼِﻴْﺮٌ ‘অতএব তুমি ও তোমার সাথে যারা তওবা করেছে, সবাই সোজা-সরল পথে চলে যাও, যেমন তোমাকে হুকুম দেয়া হয়েছে এবং সীমালংঘন করবে না’ (হূদ ১১/১১২)। বিশ্বাসের বিষয় হ’ল পবিত্র কুরআনের একটি আয়াত কিংবা ছহীহ হাদীছের একটি অংশও কোনভাবেই অস্বীকার করা যাবে না। আর যদি কেউ অস্বীকার করে কিংবা রদবদল করে পালন করে, তবে সে ব্যক্তি পরকালে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এখানে ( ﺍﺳﺘﻘﻢ ) -এর ব্যাখ্যা হ’ল রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যে সুষ্ঠু ও সঠিক মূলনীতি শিক্ষা দিয়েছেন তার মধ্যে বিন্দুমাত্র হরাস-বৃদ্ধি বা পরিবর্ধন-পরিমার্জনকারী পথভ্রষ্ট হবে। তার নিয়ত যতই ভাল হোক না কেন। তাছাড়া আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করার লক্ষ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল যে নির্দেশ দিয়েছেন, তার মধ্যে কোনরূপ কমতি বা গাফলতি মানুষকে যেমন ইস্তেকামাতের আদর্শ হ’তে বিচ্যুত করে। অনুরূপভাবে তার মধ্যে নিজের পক্ষ হ’তে বাড়াবাড়ি মানুষকে বিদ‘আতে লিপ্ত করে। যদিও সে মনে করে, আমি আল্লাহর সন্তুষ্টি হাছিল করছি। অথচ ক্রমান্বয়ে সে আল্লাহর বিরাগভাজন হ’তে থাকে।
[16]
৩. গোমরাহীর পথে পরিচালিত হওয়া :
কোন ছহীহ হাদীছকে বিকৃত কিংবা সামান্যতম পরিবর্তন করা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের পরিপন্থী। সেই সাথে ঐ সকল ব্যক্তির আমলে ছালেহ বিনষ্ট হয় এবং ইস্তিক্বামাতের রাস্তাচ্যুত হয়ে গোমরাহীর পথে পরিচালিত হয়। অতঃপর তার শেষ পরিণাম হয় অত্যন্ত ভয়াবহ স্থান জাহান্নাম। মহান আল্লাহ বলেন, ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﻌْﺺِ ﺍﻟﻠﻪَ ﻭَﺭَﺳُﻮْﻟَﻪُ ﻓَﻘَﺪْ ﺿَﻞَّ ﺿَﻼَﻻً ﻣُﺒِﻴْﻨًﺎ ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের নাফরমানী করল, সে স্পষ্ট পথভ্রষ্টতার মধ্যে পতিত হ’ল’ (আহযাব ৩৩/৩৬)। যারা আল্লাহর বিধানের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে এবং আলোর বিনিময়ে অন্ধকার ও উত্তমের বিনিময়ে মন্দকে ক্রয় করে থাকে, তারাই অধিক পথভ্রষ্ট। মহান আল্লাহ বলেন, ﺍﻟﻠﻪَ ﻧَﺰَّﻝَ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏَ ﺑِﺎﻟْﺤَﻖِّ ﻭَﺇِﻥَّ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﺍﺧْﺘَﻠَﻔُﻮْﺍ ﻓِﻲ ﺍﻟْﻜِﺘَﺎﺏِ ﻟَﻔِﻲْ ﺷِﻘَﺎﻕٍ ﺑَﻌِﻴْﺪٍ ‘আল্লাহ নাযিল করেছেন সত্যপূর্ণ কিতাব। আর যারা কিতাবের মাঝে মতবিরোধ সৃষ্টি করেছে, নিশ্চয়ই তারা যিদের বশবর্তী হয়ে (ভ্রষ্টপথে) অনেক দূরে চলে গেছে’ (বাক্বারাহ ২/১৭৬)। এদের পরিচয় দিয়ে আল্লাহ বলেন, ﺃُﻭﻟَﺌِﻚَ ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﺍﺷْﺘَﺮَﻭُﺍ ﺍﻟﻀَّﻼَﻟَﺔَ ﺑِﺎﻟْﻬُﺪَﻯ ﻭَﺍﻟْﻌَﺬَﺍﺏَ ﺑِﺎﻟْﻤَﻐْﻔِﺮَﺓِ
‘এরাই হ’ল সে সমস্ত লোক যারা হেদায়াতের বিনিময়ে গোমরাহী এবং ক্ষমা ও অনুগ্রহের বিনিময়ে আযাব খরিদ করেছে’ (বাক্বারাহ ২/১৭৫)।
ঐ সকল ব্যক্তিকে সুন্নাত বিকৃত করা থেকে নিবৃত্ত হ’তে বললে, তারা বাপ-দাদার রায়কে সঠিক বলে মনে করে এবং তাদের পৈতৃক বিধানের উপর অবিচল থাকে। মহান আল্লাহ বলেন, ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻗِﻴْﻞَ ﻟَﻬُﻢْ ﺗَﻌَﺎﻟَﻮْﺍ ﺇِﻟَﻰ ﻣَﺎ ﺃَﻧْﺰَﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺮَّﺳُﻮْﻝِ ﻗَﺎﻟُﻮْﺍ ﺣَﺴْﺒُﻨَﺎ ﻣَﺎ ﻭَﺟَﺪْﻧَﺎ ﻋَﻠَﻴْﻪِ ﺁﺑَﺎﺀَﻧَﺎ‘যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহর নাযিলকৃত বিধান এবং রাসূলের দিকে এসো, তখন তারা বলে, আমাদের জন্যে তাই যথেষ্ট যার উপর আমরা আমাদের বাপ-দাদাকে পেয়েছি’ (মায়েদা ৫/১০৪)। আবার তাদেরকে কুরআন ও সুন্নাহর প্রতি আকৃষ্ট হ’তে বললে, তারা নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে থাকে এবং অনুমানের ভিত্তিতে কথা বলে।
পক্ষান্তরে আল্লাহর ভালবাসা ও ক্ষমা লাভের জন্য রাসূল (ছাঃ)-এর আনুগত্যের কোন বিকল্প নেই। মহান আল্লাহ বলেন, ﻗُﻞْ ﺇِﻥْ ﻛُﻨْﺘُﻢْ ﺗُﺤِﺒُّﻮْﻥَ ﺍﻟﻠﻪَ ﻓَﺎﺗَّﺒِﻌُﻮْﻧِﻲْ ﻳُﺤْﺒِﺒْﻜُﻢُ ﺍﻟﻠﻪُ ﻭَﻳَﻐْﻔِﺮْ ﻟَﻜُﻢْ ﺫُﻧُﻮْﺑَﻜُﻢْ ﻭَﺍﻟﻠﻪُ ﻏَﻔُﻮْﺭٌ ﺭَﺣِﻴْﻢٌ ‘বল, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালবাসতে চাও, তবে আমার অনুসরণ কর, তাহ’লে আল্লাহ তোমাদের ভালবাসবেন এবং তোমাদের গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। কারণ আল্লাহ ক্ষমাশীল ও দয়াবান’ (আলে ইমরান ৩/৩১)। অন্যত্র তিনি বলেন, ﻓَﺈِﻥْ ﻟَﻢْ ﻳَﺴْﺘَﺠِﻴْﺒُﻮْﺍ ﻟَﻚَ ﻓَﺎﻋْﻠَﻢْ ﺃَﻧَّﻤَﺎ ﻳَﺘَّﺒِﻌُﻮْﻥَ ﺃَﻫْﻮَﺍﺀَﻫُﻢْ ﻭَﻣَﻦْ ﺃَﺿَﻞُّ ﻣِﻤَّﻦِ ﺍﺗَّﺒَﻊَ ﻫَﻮَﺍﻩُ ﺑِﻐَﻴْﺮِ ﻫُﺪًﻯ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻠﻪِ ‘অতঃপর তারা যদি তোমার কথায় সাড়া না দেয়, তবে জানবে, তারা শুধু নিজের প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। আল্লাহর হেদায়াতের (কুরআন ও সুন্নাহ) পরিবর্তে যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, তার চাইতে অধিক পথভ্রষ্ট আর কে?’ (কাছাছ ২৮/৫০)। কোন কোন সময় মানুষ সংখ্যাধিক্যের দোহাই দিয়ে কুরআন-হাদীছের শিক্ষা ও সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে। অথচ সংখ্যা কখনও হকের মানদন্ড নয়। যেমন আল্লাহ বলেন, ﻭَﺇِﻥْ ﺗُﻄِﻊْ ﺃَﻛْﺜَﺮَ ﻣَﻦْ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ﻳُﻀِﻠُّﻮْﻙَ ﻋَﻦْ ﺳَﺒِﻴْﻞِ ﺍﻟﻠﻪِ ﺇِﻥْ ﻳَﺘَّﺒِﻌُﻮْﻥَ ﺇِﻻَّ ﺍﻟﻈَّﻦَّ ﻭَﺇِﻥْ ﻫُﻢْ ﺇِﻻَّ ﻳَﺨْﺮُﺻُﻮْﻥَ ‘যদি তুমি দুনিয়ার অধিকাংশ লোকের কথামত চল তবে তারা তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করে দিবে। তারা তো শুধু ধারণার অনুসরণ করে এবং তারা কেবল অনুমানভিত্তিক কথা বলে’ (আন‘আম ৬/১১৬)। অথচ সত্যের মুকাবিলায় ধারণার কোন মূল্য নেই’ (নাজম ৫৯/২৮)। হক্ব কথার পর সবই ভ্রান্ত। যে ব্যক্তি নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে অনুমানের ভিত্তিতে কথা বলে, সে সুন্নাত থেকে বেরিয়ে পথভ্রষ্ট হয়। ইমাম আবু হানীফা (রহঃ) বলেন, তোমরা দ্বীনের ব্যাপারে ‘রায়’ অনুযায়ী কোন কথা বল না। তোমাদের কর্তব্য হ’ল সুন্নাহর অনুসরণ করা। যে ব্যক্তি সুন্নাত থেকে বেরিয়ে গেল, সে পথ ভ্রষ্ট হ’ল। [17]
দ্বীন আমাদের নিকটে পৌঁছেছে পূর্ণাঙ্গরূপে। তাতে কোন কিছু যোগ-বিয়োগ করার প্রয়োজন নেই। মহান আল্লাহ বলেন, ﺍﻟْﻴَﻮْﻡَ ﺃَﻛْﻤَﻠْﺖُ ﻟَﻜُﻢْ ﺩِﻳْﻨَﻜُﻢْ ‘আজ তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীনকে পূর্ণাঙ্গ করে দিলাম’ (মায়েদা ৫/৩)। পূর্ণতা বলতে কুরআন ও সুন্নাহর সকল ইলম। বিশিষ্ট তাবেঈ ইবনে সীরীন (৩৩-১১০হিঃ) বলেছেন, ﺇِﻥَّ ﻫَﺬَﺍ ﺍﻟْﻌِﻠْﻢَ ﺩِﻳْﻦٌ ﻓَﺎﻧْﻈُﺮُﻭْﺍ ﻋَﻤَّﻦْ ﺗَﺄْﺧُﺬُﻭْﻥَ ﺩِﻳْﻨَﻜُﻢْ ‘নিশ্চয়ই কুরআন-সুন্নাহর জ্ঞানটাই হ’ল দ্বীন। অতএব তোমরা দেখ, কার নিকট থেকে দ্বীন গ্রহণ করছ’। [18]
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান। তার প্রমাণ হ’ল বিদায় হজ্জের ভাষণে সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে রাসূল (ছাঃ)-এর ভাষণ। তিনি বললেন, ﻭَﺃَﻧْﺘُﻢْ ﺗُﺴْﺄَﻟُﻮْﻥَ ﻋَﻨِّﻰْ ﻓَﻤَﺎ ﺃَﻧْﺘُﻢْ ﻗَﺎﺋِﻠُﻮْﻥَ . ﻗَﺎﻟُﻮْﺍ ﻧَﺸْﻬَﺪُ ﺃَﻧَّﻚَ ﻗَﺪْ ﺑَﻠَّﻐْﺖَ ﻭَﺃَﺩَّﻳْﺖَ ﻭَﻧَﺼَﺤْﺖَ . ﻓَﻘَﺎﻝَ ﺑِﺈِﺻْﺒَﻌِﻪِ ﺍﻟﺴَّﺒَّﺎﺑَﺔِ ﻳَﺮْﻓَﻌُﻬَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﺀِ ﻭَﻳَﻨْﻜُﺘُﻬَﺎ ﺇِﻟَﻰ ﺍﻟﻨَّﺎﺱِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺷْﻬَﺪِ ﺍﻟﻠَّﻬُﻢَّ ﺍﺷْﻬَﺪْ .
‘ক্বিয়ামতের দিন আমার সম্পর্কে তোমাদের প্রশ্ন করা হবে। সেই দিন কি জবাব দিবে? সকলে সমস্বরে বলল, আমরা স্বাক্ষ্য দিচ্ছি, আপনি আল্লাহর আহকাম রিসালা ও নবুওয়াতের হক্ব আদায় করেছেন এবং সকল বিষয়ে উপদেশ দান করেছেন। নবী করীম (ছাঃ) স্বীয় শাহাদাত আঙ্গুল আকাশের দিকে উঠিয়ে মানুষের দিকে ঝুকাতে ঝুকাতে বললেন, হে আল্লাহ! স্বাক্ষী থাকুন, স্বাক্ষী থাকুন, স্বাক্ষী থাকুন’। [19] সুতরাং দ্বীনের মধ্যে কোন রকম সংযোজন-বিয়োজনের প্রয়োজন নেই।
এরপরেও যারা দ্বীন (কুরআন ও সুন্নাহ) নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হবে আল্লাহ তাদেরকে আযাব ও গযবের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে সতর্ক করেছেন। মহান আল্লাহ বলেন, ﻭَﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﻳُﺤَﺎﺟُّﻮْﻥَ ﻓِﻲ ﺍﻟﻠﻪِ ﻣِﻦْ ﺑَﻌْﺪِ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘُﺠِﻴْﺐَ ﻟَﻪُ ﺣُﺠَّﺘُﻬُﻢْ ﺩَﺍﺣِﻀَﺔٌ ﻋِﻨْﺪَ ﺭَﺑِّﻬِﻢْ ﻭَﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﻏَﻀَﺐٌ ﻭَﻟَﻬُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺷَﺪِﻳْﺪٌ
‘আল্লাহর দ্বীন মেনে নেয়ার পর যারা সে সম্পর্কে বিতর্কে প্রবৃত্ত হয়, তাদের বিতর্ক তাদের পালনকর্তার কাছে বাতিল, তাদের প্রতি আল্লাহর গযব ও তাদের জন্য রয়েছে কঠোর আযাব’ (শূরা ৪২/১৬)।
হাদীছের কিয়দংশও বিকৃত হ’লে কিংবা বিরোধিতা করলে ফিৎনায় পড়া অবশ্যম্ভাবী। যেমন আল্লাহ বলেন, ﺍﻟَّﺬِﻳْﻦَ ﻳُﺨَﺎﻟِﻔُﻮْﻥَ ﻋَﻦْ ﺃَﻣْﺮِﻩِ ﺃَﻥْ ﺗُﺼِﻴْﺒَﻬُﻢْ ﻓِﺘْﻨَﺔٌ ﺃَﻭْ ﻳُﺼِﻴْﺒَﻬُﻢْ ﻋَﺬَﺍﺏٌ ﺃَﻟِﻴْﻢٌ ‘যারা রাসূলের আদেশ-নিষেধের বিরোধিতা করে, তারা যেন এ বিষয়ে ভয় করে যে, তাদেরকে (দুনিয়ায়) আক্রান্ত করবে নানাবিধ ফিৎনা এবং (পরকালে) গ্রাস করবে মর্মান্তিক আযাব’ (নূর ২৪/৬৩)।
রাসূল (ছাঃ) আমাদের নিকটে পূর্ণাঙ্গ পরিচ্ছন্ন দ্বীন নিয়ে এসেছেন। তিনি বলেছেন, ﻟَﻘَﺪْ ﺟِﺌْﺘُﻜُﻢْ ﺑِﻬَﺎ ﺑَﻴْﻀَﺎﺀَ ﻧَﻘِﻴَّﺔً ‘আমি তোমাদের নিকটে এসেছি, একটি স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন দ্বীন নিয়ে’। [20] এ দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে তিনি কঠিনভাবে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ﻭَﺇِﻳَّﺎﻛُﻢْ ﻭَﻣُﺤْﺪَﺛَﺎﺕِ ﺍﻷُﻣُﻮْﺭِ ﻓَﺈِﻥَّ ﻛُﻞَّ ﻣُﺤْﺪَﺛَﺔٍ ﺑِﺪْﻋَﺔٌ ﻭَﻛُﻞَّ ﺑِﺪْﻋَﺔٍ ﺿَﻼَﻟَﺔٌ ‘আর দ্বীনের মধ্যে নতুন কিছু সংযোজনের ব্যাপারে সাবধান থাকবে। কারণ প্রতিটি নতুন সংযোজনই বিদ‘আত। আর প্রতিটি বিদ‘আতই গোমরাহী’। [21]
দ্বীনের মধ্যে নতুন কোন কিছু সৃষ্টি করা রাসূলের প্রতি মিথ্যারোপের শামিল। এর পরিণতি হ’ল জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হওয়া। রাসূল (ছাঃ) বলেন, ﻣَﻦْ ﻳَﻘُﻞْ ﻋَﻠَﻰَّ ﻣَﺎ ﻟَﻢْ ﺃَﻗُﻞْ ﻓَﻠْﻴَﺘَﺒَﻮَّﺃْ ﻣَﻘْﻌَﺪَﻩُ ﻣِﻦَ ﺍﻟﻨَّﺎﺭِ ‘যে ব্যক্তি আমার নামে এমন কোন কথা বলে, যা আমি বলিনি, সে যেন তার ঠিকানা জাহান্নামে করে নেয়’।
[22]
ছাহাবীগণ জীবিত থাকা অবস্থায় দ্বীনের মধ্যে নতুন নতুন মত ও প্রথা চালু হয়েছিল। যেমন একদা আবু মূসা আশ‘আরী (রাঃ) ইবনু মাসউদ (রাঃ)-কে মসজিদে ডেকে দেখালেন কিছু লোক দলে দলে বসে কংকর নিয়ে ১০০ বার তাকবীর, তাসবীহ, তাহলীল গণনা করেছে। তা দেখে তিনি বললেন, হে মুহাম্মাদের উম্মত! ধিক, তোমাদের ধ্বংস আসন্ন। এখনও নবীর ছাহাবীগণ জীবিত। আল্লাহর কসম! আজ মনে হচ্ছে তোমরা মুহাম্মাদের দ্বীন (কুরআন ও সুন্নাহ) হ’তে আরও বেশী সঠিক পথে আছ কিংবা ভ্রষ্টতার দ্বার খুলে দিয়েছ। ঐ সকল ব্যক্তিরা বলল, আমরা এর মাধ্যমে উত্তম আমল করারই ইচ্ছা পোষণ করেছি। তিনি বললেন, এমন কতক ব্যক্তি আছে, যারা কল্যাণ চায় বটে, কিন্তু কল্যাণ লাভ করতে পারে না।[23]
অন্যত্র এসেছে, মারওয়ান মদীনার গভর্ণর থাকাবস্থায় ঈদের ছালাতের পূর্বে মিম্বারে দাঁড়িয়ে খুৎবা দেয়ার প্রচলন করেন। কিন্তু আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) এই পদ্ধতির প্রতিবাদ করেছিলেন। কেননা এটা সুন্নাত বিরোধী আমল এবং দ্বীন ইসলামে তা বিদ‘আত। [24]
বিদ‘আদ সম্পর্কে ইবনে আববাস (রাঃ) বলেছেন, ﻣﻦ ﺃﺣﺪﺙ ﺭﺃﻳﺎ ﻟﻴﺲ ﻓﻲ ﻛﺘﺎﺏ ﺍﻟﻠﻪ ﻭﻟﻢ ﺗﻤﺾ ﺑﻪ ﺳﻨﺔ ﻣﻦ ﺭﺳﻮﻝ ﺍﻟﻠﻪ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭ ﺳﻠﻢ ﻟﻢ ﻳﺪﺭ ﻋﻠﻲ ﻣﺎ ﻫﻮ ﻣﻨﻪ ﺇﺫﺍ ﻟﻘﻲ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﺰ ﻭ ﺟﻞ অর্থাৎ যে ব্যক্তি (দ্বীনের মধ্যে) এমন বিষয় উদ্ভাবন করল, যা আল্লাহর কিতাবে নেই এবং রাসূলের সুন্নাতে পাওয়া যায় না, আল্লাহর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে তার স্থান কোথায় হবে সে তা জানে না। [25]
এছাড়া বিদ‘আতী ব্যক্তি সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) হুঁশিয়ারী উচ্চারণ করে বলেছেন,
(১) ‘যে ব্যক্তি কোন বিদ‘আতীকে সাহায্য করে, আল্লাহ তাকে লা‘নত করেন’। [26]
(২) ‘যে বিদ‘আতীকে সম্মান করল, সে ইসলাম ধ্বংসে সাহায্য করল’।
[27]
(৩) ‘যে বিদ‘আতীকে আশ্রয় দিল, তার প্রতি আল্লাহর অভিশাপ’। [28]
(৪) ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক বিদ‘আতীর থেকে তওবাকে আড়াল করে রাখেন, যতক্ষণ না সে বিদ‘আত পরিহার করে’। [29]
(৫) ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রত্যেক বিদ‘আতীর তওবা প্রত্যাখ্যান করেন’। [30]
(৬) ‘আল্লাহ প্রত্যেক বিদ‘আতীর আমল প্রত্যাখ্যান করেন, যতক্ষণ না সে বিদ‘আত পরিহার করে’। [31]
সুন্নাত ও বিদ‘আত সম্পর্কে সালাফে ছালেহীনের উক্তি-
(১) খলীফা আবূ বকর (রাঃ) বলেছেন, ‘সুন্নাতই হ’ল আল্লাহর মযবূত রজ্জু’।
(২) ওমর (রাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্নাত ত্যাগ করল, সে কুফরী করল। অন্যত্র তিনি বলেন, ‘যারা নিজ রায়ের ভিত্তিতে কথা বলে, তারা সুন্নাতের শত্রু।…তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হয়েছে এবং অন্যদেরও বিপথগামী করেছে।
(৩) আববাস (রাঃ) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সুন্নাতের বিরোধিতা করে, সে নিজ প্রবৃত্তির অনুসরণ করে, যদিও তার গলা কাটা যায়’।
(৪) ইবনে আববাস (রাঃ) বলেন, ‘প্রতি বছরই লোকজন একটি বিদ‘আত চালু করছে এবং একটি সুন্নাতকে মেরে ফেলছে। শেষ পর্যন্ত বিদ‘আতই জীবন্ত হবে এবং সুন্নাত মৃত্যু বরণ করবে’। [32]
অতএব দ্বীনের মূলনীতির কোন বিকৃতি করা চলবে না। যদি কেউ তা করে, তবে সে স্পষ্ট কুফরী করবে।
৪. জাহান্নামী হওয়া :
যারা কুরআন ও সুন্নাহর নির্দেশ মোতাবেক ফায়ছালা করে না, তারা আল্লাহ ও রাসূলের প্রতি যুূলুম করে। মহান আল্লাহ বলেন, ﻭَﻣَﻦْ ﻟَﻢْ ﻳَﺤْﻜُﻢْ ﺑِﻤَﺎ ﺃَﻧْﺰَﻝَ ﺍﻟﻠﻪُ ﻓَﺄُﻭﻟَﺌِﻚَ ﻫُﻢُ ﺍﻟْﻜَﺎﻓِﺮُﻭْﻥَ ‘যারা আল্লাহর দেয়া বিধান অনুসারে ফায়ছালা করে না, তারা কাফের’ (মায়েদা ৫/৪৪), তারা যালেম (মায়েদা ৫/৪৫), তারা ফাসেক (মায়েদা ৫/৪৭)।
আল্লাহর বিধান অমান্যকারী কাফের, যালেম ব্যক্তির আবাসস্থল জাহান্নাম। মহান আল্লাহ বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও রাসূলের নাফরমানী করল, তার জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত হ’ল। সেখানে সে চিরস্থায়ীভাবে অবস্থান করবে (জ্বিন ৭২/২৩)। তাতে ঊনিশজন কর্মচারী নিয়োজিত রয়েছে (মুদ্দাছছির ৭৪/৩০)। তাদেরকে বলে দাও, গ্রীষ্মের প্রখর তাপ অপেক্ষা জাহান্নামের আগুন আরও কঠিন ও ভয়াবহ। যদি তারা বুঝত (তওবা ৯/৮১), এটি অতীব নিকৃষ্ট আবাসস্থল (বাক্বারাহ ২/২০৬; ইমরান ৩/১৬২, ১৯৭)।
আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য হ’ল- পবিত্র কুরআন ও সুন্নাহতে যা কিছু আদেশ করা হয়েছে তা কোনরূপ বিকৃত না করে পালন করা এবং যা নিষেধ করা হয়েছে তা মেনে চলা। এ মর্মে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ﻓَﺈِﺫَﺍ ﺃَﻣَﺮْﺗُﻜُﻢْ ﺑِﺸَﻰْﺀٍ ﻓَﺨُﺬُﻭْﺍ ﻣِﻨْﻪُ ﻣَﺎ ﺍﺳْﺘَﻄَﻌْﺘُﻢْ ﻭَﺇِﺫَﺍ ﻧَﻬَﻴْﺘُﻜُﻢْ ﻋَﻦْ ﺷَﻰْﺀٍ ﻓَﺎﻧْﺘَﻬُﻮْﺍ ‘যখন আমি তোমাদেরকে কোন কিছুর হুকুম করি, তখন সেটা যথাসাধ্য পালন কর, আর আমি যখন কোন কিছু নিষেধ করি, তখন তোমরা সেটা থেকে বিরত থাক’। [33]
যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল, সে জান্নাতে যাবে। আর যে অমান্য করল সে জাহান্নামের চিরস্থায়ী বাসিন্দা হবে এবং আফসোস করে তারা বলবে, হায় আফসোস! আমি যদি রাসূলের সাথে পথ অবলম্বন করতাম। হায় আমার দুর্ভাগ্য! আমি যদি অমুককে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করতাম (ফুরকান /২৭-২৮)। এ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন, ﻛُﻞُّ ﺃُﻣَّﺘِﻰْ ﻳَﺪْﺧُﻠُﻮْﻥَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ، ﺇِﻻَّ ﻣَﻦْ ﺃَﺑَﻰ . ﻗَﺎﻟُﻮْﺍ ﻳَﺎ ﺭَﺳُﻮْﻝَ ﺍﻟﻠﻪِ ﻭَﻣَﻦْ ﻳَﺄْﺑَﻰ ﻗَﺎﻝَ ﻣَﻦْ ﺃَﻃَﺎﻋَﻨِﻰْ ﺩَﺧَﻞَ ﺍﻟْﺠَﻨَّﺔَ، ﻭَﻣَﻦْ ﻋَﺼَﺎﻧِﻰْ ﻓَﻘَﺪْ ﺃَﺑَﻰ ‘আমার প্রত্যেক উম্মত জান্নাতে যাবে। কেবল তারা ব্যতীত, যারা অসম্মত হবে। জিজ্ঞেস করা হ’ল অসম্মত কারা? তিনি বললেন, যারা আমার অবাধ্যতা করবে, তারাই হ’ল অসম্মত’। [34] এই অবাধ্য ব্যক্তিরা রাসূলের সুন্নাতকে পরিবর্তন করে এবং তাতে নতুন নতুন কথা, কাজের উদ্ভাবন করে। অথচ এই নতুন সৃষ্টি থেকে বেঁচে থাকার জন্য রাসূল (ছাঃ) নির্দেশও দিয়েছেন। তিনি বলেন, ﻭَﺇِﻳَّﺎﻛُﻢْ ﻭَﻣُﺤْﺪَﺛَﺎﺕِ ﺍﻷُﻣُﻮْﺭِ ﻓَﺈِﻥَّ ﻛُﻞَّ ﻣُﺤْﺪَﺛَﺔٍ ﺑِﺪْﻋَﺔٌ ﻭَﻛُﻞَّ ﺑِﺪْﻋَﺔٍ ﺿَﻼَﻟَﺔٌ ‘তোমরা প্রত্যেক নতুন সৃষ্টি হ’তে বেঁচে থাক। কেননা প্রত্যেকটি নতুন সৃষ্টিই বিদ‘আত এবং প্রত্যেক বিদ‘আতই গোমরাহী। আর প্রত্যেক গোমরাহী জাহান্নাম’। [35]
দ্বীনের নামে ছওয়াবের আশায় কিংবা নিজের ইচ্ছামত আমলকারী বিদ‘আতী ব্যক্তি রাসূল (ছাঃ)-এর শাফা‘আত থেকে বঞ্চিত হবে। এ সম্পর্কে রাসূল (ছাঃ) বলেছেন,
ﻭَﺇِﻧَّﻪُ ﺳَﻴُﺠَﺎﺀُ ﺑِﺮِﺟَﺎﻝٍ ﻣِﻦْ ﺃُﻣَّﺘِﻰْ، ﻓَﻴُﺆْﺧَﺬُ ﺑِﻬِﻢْ ﺫَﺍﺕَ ﺍﻟﺸِّﻤَﺎﻝِ . ﻓَﺄَﻗُﻮﻝُ ﻳَﺎ ﺭَﺏِّ ﺃُﺻَﻴْﺤَﺎﺑِﻰ . ﻓَﻴَﻘُﻮﻝُ ﺇِﻧَّﻚَ ﻻَ ﺗَﺪْﺭِﻯ ﻣَﺎ ﺃَﺣْﺪَﺛُﻮْﺍ ﺑَﻌْﺪَﻙَ . ﻓَﺄَﻗُﻮْﻝُ ﻛَﻤَﺎ ﻗَﺎﻝَ ﺍﻟْﻌَﺒْﺪُ ﺍﻟﺼَّﺎﻟِﺢُ ‏( ﻭَﻛُﻨْﺖُ ﻋَﻠَﻴْﻬِﻢْ ﺷَﻬِﻴْﺪًﺍ ﻣَﺎ ﺩُﻣْﺖُ ﻓِﻴْﻬِﻢْ ‏) ﺇِﻟَﻰ ﻗَﻮْﻟِﻪِ ‏( ﺍﻟْﺤَﻜِﻴﻢُ ‏) ﻗَﺎﻝَ ﻓَﻴُﻘَﺎﻝُ ﺇِﻧَّﻬُﻢْ ﻟَﻢْ ﻳَﺰَﺍﻟُﻮْﺍ ﻣُﺮْﺗَﺪِّﻳْﻦَ ﻋَﻠَﻰ ﺃَﻋْﻘَﺎﺑِﻬِﻢْ -
‘সাবধান হয়ে যাও, আমার উম্মতের কিছু লোককে ধরে আনা হবে তাদেরকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাওয়া হবে। তখন আমি বলব, হে আমার রব! এরা তো আমার উম্মত। জবাবে আমাকে বলা হবে, তুমি জান না তোমার (ওফাতের) পরে এরা কত নতুন (হাদীছ) কথা তৈরী করেছিল। আমি তখন আল্লাহর সৎ বান্দা (ঈসার) মত বলব, ‘যতদিন আমি তাদের মধ্যে ছিলাম, ততদিন আমি ছিলাম তাদের রক্ষণাবেক্ষণকারী। কিন্তু আমার পরে তুমিই তাদের সাক্ষী। তখন বলা হবে, তুমি এদের কাছ থেকে প্রত্যাবর্তন করার পর, এরা (তোমার দ্বীন তথা কুরআন-সুন্নাহ থেকে) মুখ ফিরিয়ে নিয়ে উল্টো পথে চলেছিল’। [36]
শুধু তাই নয়, ঐ সমস্ত বিদ‘আতী ব্যক্তিরা হাউযে কাউছারের পানি পান করতে পারবে না। তৃষ্ণার্ত অবস্থায় তাদেরকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘হাউযে কাউছারের অজস্র কল্যাণ আছে এবং হাউযে কাউছারে আমার উম্মত পানি পান করতে যাবে। এর পান পাত্রের সংখ্যা আকাশের নক্ষত্রসম হবে। তখন কতক ব্যক্তিকে ফেরেশতাগণ হাউযে কাউছার থেকে সরিয়ে দিবেন। আমি বলব, হে আমার রব! তারা তো আমার উম্মত। আল্লাহ বলবেন, তুমি জান না তোমার পরে তারা কি নতুন মত ও পথ (বিদ‘আত) অনুসরণ করেছিল’।
[37]
কুরআন ও সুন্নাহ উভয়ের বাহক ও প্রচারক হ’লেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)। অতএব সুন্নাহকে অস্বীকার করা কিংবা নতুন কিছু উদ্ভাবন করার উদ্দ্যেশ্যই হ’ল রাসূল (ছাঃ)-কে পরোক্ষভাবে অস্বীকার করা (নাউযুবিল্লাহ)। যার পরিণাম জাহান্নাম।
পরিশেষে বলব, ইলমে দ্বীন ক্রমান্বয়ে দুর্বল রশির মত ক্ষয়ে চলেছে। ইলমের ধারক-বাহক আলেম সমাজকে অবশ্যই সাবধান হ’তে হবে। কেননা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, ‘আল্লাহ ইলম (কুরআন ও সুন্নাহর জ্ঞান) এমনভাবে উঠিয়ে নিবেন না, যাতে লোকদের থেকে তা ছিনিয়ে নেয়া হয়। বরং আলেমদের ইন্তিকালের মাধ্যমে ইলমকে উঠিয়ে নিবেন।
এমনকি পরিশেষে একজন বিদ্বান ব্যক্তিও জীবিত থাকবে না। তখন লোকেরা জাহেল (মূর্খ) ব্যক্তিদেরকে তাদের ইমাম (নেতা) বানাবে। আর তাদের কাছে মাসআলা-মাসায়েল জিজ্ঞেস করবে, তারা ইলম ছাড়াই ফায়ছালা দিবে। এভাবে তারা নিজেরা বিপথগামী হবে এবং লোকদেরকেও বিপথে পরিচালিত করবে’। [38] অতএব আসুন, আমরা সকলে ইসলামকে জীবন-বিধান হিসাবে সঠিকভাবে মান্য করে পরকালীন জীবনে নাজাত লাভের পথকে সুগম করি। আল্লাহ আমাদের সকলকে তাওফীক দান করুন- আমীন!
আবূ নাফিয লিলবার আল-বারাদী
[11] . বুখারী হা/৭২৮১; মিশকাত হা/১৪৪, ‘কুরআন-সুন্নাহকে অাঁকড়ে ধরা’ অনুচ্ছেদ।
[12] . বুখারী হা/৫০৬৩; মুসলিম হা/১৪০১; মিশকাত হা/১৪৫।
[13] . হাদীছের প্রামাণিকতা, পৃঃ ৮।
[14] . তদেব, পৃঃ ১১।
[15] . বুখারী হা/৬৪৯৭ ।
[16] . তাফসীর মা‘আরেফুল কুরআন, পৃঃ ৬৪৫।
[17] . হাদীছের প্রামাণিকতা, পৃঃ ৩৮ গৃহীতঃ শা‘রানী, মীযানুল কুবরা ১/৬৩ পৃঃ।
[18] . মুক্বাদ্দামা মুসলিম, মিশকাত হা/২৭৩ ‘ইলম‘ অধ্যায় ।
[19] . মুসলিম হা/১২১৮ ‘বিদায় হজ্জ’ অনুচ্ছেদ; আবু দাউদ হা/১৯০৭; মিশকাত হা/২৫৫৫।
[20] . আহমাদ, বায়হাকী, মিশকাত হা/১৭৭ , সনদ ছহীহ।
[21] . আবু দাউদ, তিরমিযী, ইবনে মাজাহ, মিশকাত হা/১৬৫, সনদ ছহীহ।
[22] . বুখারী হা/১০৯; মিশকাত হা/৫৯৪০।
[23] . সিলসিলা ছহীহাহ হা/২০০৫; দারেমী হা/২০৪।
[24] . বুখারী ২/৯০৮, ‘মিম্বর না নিয়ে ঈদগাহে গমন’ অনুচ্ছেদ।
[25] . সুনান দারেমী, হা/১৫৮, সনদ ছহীহ; আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের পরিচিতি, পৃঃ ৩০ ।
[26] . মুসলিম হা/১৩৬৬।
[27] . মিশকাত হা/১৮৯; তারাজু‘আত হা/৫৯, সনদ হাসান।
[28] . মুসলিম হা/১৯৭৮ ; মিশকাত হা/৪০৭০।
[29] . ত্বাবারানী, ছহীহ তারগীব হা/৫৪।
[30] . ছহীহুল জামে‘ হা/১৬৯৯।
[31] . সুনান ইবনু মাজাহ হা/৫০; তারাজু‘আত হা/২৫।
[32] . আহলে সুন্নাত ওয়াল জামায়াতের পরিচিতি, পৃঃ ৪২-৫৫ ।
[33] . মুসলিম হা/১৩৩৭; ইবনু মাজাহ হা/২; মিশকাত হা/২৫০৫।
[34] . বুখারী হা/৭২৮০; মিশকাত হা/১৪৩ ।
[35] . আবু দাউদ হা/৪৬০৯; মিশকাত হা/১৬৫; ছহীহাহ হা/২৭৩৫ ।
[36] . বুখারী হা/৪৩৭৯ ‘যেমন আমি প্রথম সৃষ্টি করেছিলাম’ অনুচ্ছেদ।
[37] . বুখারী, মুসলিম, মিশকাত হা/৫৫৩৫, ‘কিয়ামাতের অবস্থা সমূহ ও সৃষ্টির সূচনা’ অধ্যায়, ‘হাশর’ অনুচ্ছেদ।
[38] . বুখারী, মুসলিম, রিয়াযুছ ছলেহীন, ৩/১৩৯২ ‘কিতাবুল ইলম’।

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

Post a Comment

ads

Contact Form

Name

Email *

Message *

ads

Win 10.00$