Register

Win 10.00$

যেভাবে পৃথিবীর কেন্দ্রতে অবস্থিত কাবা শরীফ!

Be the first to comment!

মুসলমানদের কিবলা পবিত্র কাবাঘর সৌদি আরবের মক্কা শহরের মসজিদুল হারাম মসজিদের মধ্যখানে অবস্থিত। হজের মৌসুমে প্রতিবছর লাখ লাখ মুসলমান কাবাঘর তাওয়াফ করতে মক্কায় গমন করেন।

পবিত্র কোরাআন ও হাদিসের ব্যখ্যায় পৃথিবীর কেন্দ্রস্থলে মক্কা নগরের অবস্থান হওয়ায় ‘বায়তুল্লাহ’ বা ‘কাবাঘর’ মক্কাতেই স্থাপন করা হয়। আল্লাহতায়ালার নির্দেশে ফেরেশতারা প্রথম দুনিয়ায় কাবাগৃহ নির্মাণ করে এখানে ইবাদত করেন। কাবাঘরটি আল্লাহর আরশে মুয়াল্লার ছায়াতলে সোজাসুজি সপ্তম আসমানে অবস্থিত মসজিদ বাইতুল মামুরের আকৃতি অনুসারে ভিত্তিস্থাপন করা হয়। আল্লাহতায়ালা কাবাগৃহকে মানবজাতির ইবাদতের কেন্দ্রস্থলরূপে নির্দিষ্ট করেন।

মুসলিম মানবজাতির ইবাদতের কেন্দ্রস্থল কাবা শরীফ পৃথিবীর ঠিক কেন্দ্রতেই অবস্থিত। কিন্তু বর্তমান সময়ে জ্ঞান বিজ্ঞানের প্রসারের ফলে অনেকেই এই বিষয়টিকে উড়িয়ে দিতে চান। কিভাবে কাবা শরীফ পৃথিবীর একেবারে কেন্দ্রস্থলে অবস্থান করছে এবং এর পেছনের অপার রহস্যের অল্পকিছু সঠিক যুক্তি ও কারন সহ ব্যখ্যা করা হয়েছে এই ভিডিওটিতে

                          YouTube

বেহেশত থেকে দুনিয়ায় পাঠানোর পর আদি মানব-মানবী হজরত আদম (আ.) ও হজরত হাওয়া (আ.) ইবাদতের জন্য একটি মসজিদ প্রার্থনা করেন। আল্লাহতায়ালা তাদের দোয়া কবুল করে কাবাগৃহকে ইবাদতের কেন্দ্র হিসেবে নির্ধারণ করে দেন। এরপর হজরত নূহ (আ.)-এর যুগের মহাপ্লাবনে কাবা শরিফ ধসে যায়। পরে আল্লাহর হুকুমে হজরত ইবরাহিম (আ.) তার পুত্র হজরত ইসমাইল (আ.)-কে সঙ্গে নিয়ে কাবাগৃহের পুনর্নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেন। আল্লাহতায়ালার নির্দেশে আল্লাহর ঘর পবিত্র কাবা শরিফের নির্মাণ হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর জীবনের অমর কীর্তি ও অন্যতম অবদান।

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ব্যক্তি পবিত্র কাবাঘর পুনঃনির্মাণের সৌভাগ্য অর্জন করলেও একমাত্র হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর নির্মাণের কথা আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে কারিমের অংশ বানিয়ে কিয়ামত পর্যন্ত মুসলিম উম্মাহর জন্য সংরক্ষিত করেছেন।

পবিত্র কোরআনে কারিমে ওই ঘটনাটি খুবই চিত্তাকর্ষক ভঙ্গিতে উপস্থাপন করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘স্মরণ করো, যখন ইবরাহিম ও ইসমাঈল কাবাগৃহের ভিত্তি স্থাপন করেছিল। তারা দোয়া করেছিল, হে পরওয়ারদেগার! আমাদের এ আমলটুকু কবুল করো। নিশ্চয়ই তুমি শ্রবণকারী, সর্বজ্ঞ। ওহে পরওয়ারদেগার! আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ করো এবং আমাদের বংশধর থেকে একটি অনুগত জাতি সৃষ্টি কর। আমাদের হজের রীতিনীতি বলে দাও এবং আমাদের ক্ষমা করো। নিশ্চয়ই তুমি তওবা কবুলকারী, দয়ালু। হে আমাদের প্রভু! এ ঘরের পড়শিদের মধ্য থেকে একজন রাসূল পাঠাও, যিনি তাদের কাছে তোমার আয়াতগুলো পাঠ করবেন। তাদের কিতাব ও হেকমত শিক্ষা দেবেন এবং তাদের পবিত্র করবেন। নিশ্চয়ই তুমি পরাক্রমশালী, প্রজ্ঞাময়।’ -সূরা বাকারা : ১২৭-১২৯
কাবাগৃহের নির্মাণ কোনো সাধারণ ঘটনা নয়।

পৃথিবীর ইতিহাসে এর চেয়ে মর্যাদাপূর্ণ বিষয় আর কিছুই হতে পারে না। কাবা নির্মাণের সময় হজরত ইবরাহিম (আ.) যে দোয়া করেছিলেন সেগুলো যত্নের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়েছে। দুনিয়ার মানুষের স্বভাব হলো, সমাজে বা ধর্মীয় কাজে সামান্য অবদান রেখে মানুষের সামনে তা বারবার উল্লেখ করে এবং আত্মপ্রশংসায় ডুবে যায়। অথচ সরাসরি আল্লাহতায়ালার ঘর নির্মাণ করছেন, তবুও তার মনে এক বিন্দু অহঙ্কার নেই। ছিল বিনয়পূর্ণ মিনতি। বিনয়াবনত কণ্ঠে বারবার তিনি বলেছেন, ‘হে আল্লাহ! মেহেরবানি করে আমাদের এ খেদমতটুকু কবুল করে নাও।’ দোয়ার দ্বিতীয় বাক্যে বলেছেন, ‘হে প্রভু! তুমি আমাদের উভয়কে তোমার আজ্ঞাবহ করো।’

বস্তুত দোয়াতে মানব জাতির জন্য শিক্ষা রয়েছে, মসজিদ নির্মাণ তো একটি নিদর্শন। তা মূল লক্ষ্য নয়। মূল লক্ষ্য হচ্ছে, জীবনের সর্বক্ষেত্রে আল্লাহর সামনে নিজেকে সঁপে দেয়া। তার বিধি-নিষেধ বিনাবাক্যে মেনে নেয়া। এজন্য মসজিদ নির্মাণের সময় হজরত ইবরাহিম (আ.) জীবনের মূল লক্ষ্য সাধনের দোয়া করেছেন। সে অমূল্য দোয়া শুধু নিজের জন্যই নয় বরং অনাগত বংশধরের জন্যও করেছেন। অতঃপর এ ঘরের মর্যাদা রক্ষা ও তার জিয়ারতের রীতিনীতি বাতলে দেয়ার জন্য প্রার্থনা করেছেন।

হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর প্রত্যেকটি দোয়া কবুল হয়েছে। ইতিহাসে আছে, তার বংশধরের মধ্যে সর্বদা একটি দল আল্লাহর আজ্ঞাবহ ছিল। এমনকি জাহেলিয়াতের আমলে আরবের সর্বত্র যখন মূর্তি-পূজার জয়জয়কার ছিল তখনও ইবরাহিমি বংশের কিছু লোক একত্ববাদ ও পরকালে বিশ্বাসী এবং আল্লাহতায়ালার আনুগত্যশীল ছিলেন।

হজরত ইবরাহিম (আ.) কর্তৃক বায়তুল্লাহ নির্মিত হওয়ার পর থেকে সব যুগেই তার জিয়ারতও অব্যাহত ছিল। শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) হজরত ইবরাহিম (আ.)-এর সে দোয়ারই ফসল, যা তিনি বায়তুল্লাহ নির্মাণকালে করেছিলেন।

এ প্রসঙ্গে হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘আমি আমার বাবা ইবরাহিম (আ.)-এর দোয়া এবং আমার ভাই ঈসা (আ.)-এর সুসংবাদ।’ -মুস্তাদরাকে হাকেম
ইসলামের ইতিহাসে ৬৩১ খ্রিস্টাব্দে নবম হিজরিতে হজের বিধান ফরজ হয়। পরের বছরে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মহানবী (সা.) হজ আদায় করেন। তিনি যেখানে, যে সময়ে, যে তারিখে, যে নিয়মে যেসব আহকাম-আরকান পালন করেন, প্রতিবছর ৮ থেকে ১৩ জিলহজ মক্কা মুকাররমা এবং এর আশপাশের এলাকাজুড়ে নির্দিষ্ট নিয়মে সেভাবেই পবিত্র হজ পালিত হয়ে আসছে।

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

Post a Comment

ads

Contact Form

Name

Email *

Message *

ads

Win 10.00$