Register

Win 10.00$

শুধু পানাহার নয়, অশ্লীলতা থেকেও দূরে থাকা রোজার উদ্দেশ্য

Be the first to comment!

মাহে রমজান মুসলমানদের জন্য অন্যতম শুদ্ধতার মাস। সিয়াম সাধনার মাধ্যমে নিজের আত্মা ও সত্তাকে পবিত্র করে তুলতে আল্লাহতালা রমজানে রোজাকে ফরজ করেছেন। কিন্তু শুধু ক্ষুধা ও পিপাসা নিবারণ করেই আত্মার পবিত্রতা অর্জনের জন্য যথেষ্ট নয়। এক্ষেত্রে কিছু বৈষয়িক বিধিনিষেধ মান্য করাও জরুরি।
মাসআলা বলছে, কেউ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত খাদ্য, পানীয় ও যৌনতা বর্জন করলে তার রোজা হবে। কিন্তু নিজের আত্মাকে পবিত্র করে তুলতে ব্যর্থ হলে ওই বাহ্যিক রোজার কোনো মূল্য বা সওয়াব পাওয়া যাবে না। এক হাদিসে রাসূলে করিম (স.) বলেছেন, ‘বহু রোজাদার এমন আছে যাদের রোজার বিনিময়ে ক্ষুধা আর পিপাসার কষ্ট ছাড়া অন্য কিছুই অর্জিত হয় না। অর্থাৎ তারা রোজার বিনিময়ে কোনো পুণ্য বা সওয়াব পায় না।
(মুসনাদে আহমাদ : ৯৬৮৫, সুনানে দারামি : ২৯২৩, সুনানে ইবনে মাজা : ১৬৯, আস-সুনানুল কুবরা : ৩২৩৬)’ রমজান মাসে রোজা রাখলে যে অপরিসীম সওয়াব পাওয়া যায়, তা কিন্তু শুধু সারাদিন ‘না খেয়ে’ থাকলেই নয়। এমন অনেক কাজ আছে যা আপনার রোজার সওয়াবকে নষ্ট করে দেয়। এর মধ্যে অন্যতম হল অশ্লীলতা। আচরণ ও চরিত্রকে অশালীনতামুক্ত করা রোজা পালনের অন্যতম একটি অপরিহার্য শর্ত।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) একটি হাদিস বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (স.) বলেছেন, ‘রোজাদার বনি আদমের প্রত্যেকটি আমলের সওয়াব ১০ গুণ থেকে ৭০০ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয়া হয়।
মহান আল্লাহ বলেছেন, রোজা শুধুই আমার জন্য আর আমি নিজে এর পুরস্কার প্রদান করব। কেননা সে (রোজাদার) তার শাহওয়াত (জৈবিক তাড়না) ও খাদ্যকে শুধু আমার (সন্তুষ্টি অর্জনের) জন্য বর্জন করে। (সহিহ আল-বোখারি : ৫৯২৭, সহিহ মুসলিম : ১১৫১, ইবনে মাজা : ১৬৩৭, মুসনাদে আহমাদ : ৯৭১২, মুসনাদে ইবনে আবি শাইবা : ৮৮৯৪)।’ হাদিসের ভাষ্য থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন মুমিন বান্দাকে রোজার জন্য অসীম পুরস্কার দান করবেন তখনই, যখন সে রোজা রাখার মাধ্যমে তার জৈবিক ক্ষুধাকে দমন করতে পারবে।
কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয়, আমাদের সমাজে বেপর্দা, বেহায়াপনা আর অশ্লীলতা অত্যন্ত মারাত্মক পর্যায়ে নেমে গেছে। রোজা ও রমজান মাসের পবিত্রতা রক্ষার্থে সকল প্রকারের অশ্লীলতাকে দমন করা জরুরি। কারণ অশ্লীলতা আমাদের সমাজে জন্য সাংঘাতিক বেমানান। অপরদিকে মাহে রমজানের পবিত্রতা রক্ষার জন্য এবং রোজাদারের রোযা পরিপূর্ণ করারর জন্য অশ্লীলতা দমন করা ছাড়া কোনো উপায় নেই। অশ্লীলতা রোজাকে দুর্বল ও সওয়াব শূন্য করে দেয়।
আসলে বেপর্দা আর অশালীনতার সঙ্গে নারীর অধিকারের কোনো সম্পর্ক নেই। ইসলামে পোশাকের বিধান হলো, যৌনাঙ্গকে আবৃত করা এবং নিজের সৌন্দর্যকে ফুটিয়ে তোলা। আল্লাহ তাআলা এরশাদ করেছেন, ‘হে বনি আদম! আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে আর অবতীর্ণ করেছি সৌন্দর্যের পোশাক এবং পরহেজগারির পোশাক আর এটিই সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে (সুরা আল-আরাফ ২৬)।
মোট কথা হল নারী হোক বা পুরুষ নিজের যৌনাঙ্গ ও তার আকৃতি জনসমক্ষে প্রদর্শন কারা চরম অশালীনতা। সেই সঙ্গে সঙ্গে অশালীন কথাবার্তা ও অঙ্গভঙ্গি সবই ইসলামী শরিয়তে হারাম। পুরুষ যেমন তার প্রয়োজনে বিচরণ করবে তেমনি নারীও তার প্রয়োজনে ঘর থেকে বের হবে এখানে ইসলামী বিধানে কোনো পার্থক্য করা হয়নি। ইসলাম নারীকে যেমন তার শরীর আবৃত করে পোশাক পরতে বলেছে, তেমনি পুরুষকেও একই একই কথা বলেছে।

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

Post a Comment

ads

Contact Form

Name

Email *

Message *

ads

Win 10.00$