Register

Win 10.00$

ঋতুবতী স্ত্রীদের সঙ্গে আচরণের বিধান

Be the first to comment!

যৌবনপ্রাপ্ত স্ত্রীলোকদের মাসিক ঋতুস্রাবকে হায়েজ বলে। হায়েজের সময় সহবাস, নামাজ, রোজা, কুরআন স্পর্শসহ অনেক ইবাদত-বন্দেগিই নিষিদ্ধ। সাধারণ নিয়মের বাইরে যদি অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহিত হয়, তা ভিন্ন কথা। স্ত্রীলোকদের ঋতুবর্তী সময়ে তাদের সঙ্গে আচরণগত বিষয়ে প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করলে তাদের ব্যাপারে এ আয়াত নাজিল হয়, যা তুলে ধরা হলো-
আয়াতের অনুবাদ (নিচে দেওয়া হলো)
আয়াত পরিচিতি ও নাজিলের কারণ
সুরা বাকারার ২২২ নং আয়াতে যৌবনপ্রাপ্ত স্ত্রীলোকদের ঋতুবতী সময়ে তাদের সঙ্গে আচার-আচরণ সংক্রান্ত বিষয়াবলি আলোচিত হয়েছে, যা লোকদের প্রশ্নের আলোকে আল্লাহ তাআলা প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি ওহির মাধ্যমে জানিয়ে দিয়েছেন।

এ আয়াতের শুরুতে ‘আজা’ (ﺍَﺫًﻱ ) শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে। এর অর্থ হলো অশুচিকর বা অপরিচ্ছন্নতা আবার রোগ-ব্যাধিও। আসলে হায়েজ শুধু একটি অশুচিকর বা অপরিচ্ছন্নতাই নয় বরং চিকিৎসা শাস্ত্রের দৃষ্টিতে এ অবস্থাটি সুস্থতার তুলনায় অসুস্থতারই কাছাকাছি।
এ ধরনের বিষয়গুলো কুরআনুল কারিমে উপমা হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে। তাই আয়াতে ঋতুবতী স্ত্রীদের নিকট থেকে ‘দূরে থাকা’ বা ধারে কাছে না যাওয়া শব্দগুলো ব্যবহার করা হয়েছে।

কিন্তু এর অর্থ এই নয় যে-
ঋতুবতী নারীর সঙ্গে এক বিছানায় বসা বা একসঙ্গে খাওয়া-দাওয়া করা যাবে না। তাদের অস্পৃশ্য-অশুচি মনে করে এক ধারে ঠেলে দিতে হবে এমন কথাও নয়। অর্থাৎ তাদের সঙ্গে শুধুমাত্র সহবাস ব্যতীত চলাফেরা, খাওয়া-দাওয়াসহ সাংসারিক সব কাজ একসঙ্গে পারস্পরিক সহযোগিতা ও সহমর্মিতার সঙ্গে করা যাবে। এতে কোনো বাধা নেই।

প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ আয়াতের যে ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন, তা থেকে বোঝা যায়, ঋতুবতী অবস্থায় স্ত্রীদের সঙ্গে কেবলমাত্র সহবাস ছাড়া বাকি সব ধরনের সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত থাকবে।

হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন যে, ইয়াহুদিরা ঋতুবতী স্ত্রীদের তাদের সঙ্গে খাবার খেতে দিত না এবং তাদের পাশে বসতেও দিত না। সাহাবায়ে কেরামগণ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে এ আয়াত নাজিল হয় এবং তিনি বলেন যে, সহবাস ছাড়া অন্য সবকিছু বৈধ।
তবে ঋতুস্রাব অবস্থায় স্ত্রীদের জন্য নামাজ, রোজা, কুরআন মাজিদ স্পর্শ, বাইতুল্লাহ তাওয়াফসহ অন্যান্য অনেক ইবাদত করা যাবে না। পবিত্র হওয়ার পর নামাজ কাজা করা লাগবে না কিন্তু ফরজ রোজা পরবর্তীতে কাজা করে নিতে হবে।

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহাকে জিজ্ঞাসা করা হলো- যদি স্ত্রী ঋতুস্রাব অবস্থায় থাকে এবং স্বামী-স্ত্রীর একই বিছানা হয় তবে তারা কি করবে? অর্থাৎ এ অবস্থায় স্বামী তার পাশে শুতে পারবে কি-না? হজরত আয়েশা বলেন, ‘আমি সংবাদ দিচ্ছি যা স্বয়ং রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম করেছেন।

একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাড়িতে এসেই তাঁর নামাজের জায়গায় চলে যান এবং নামাজে লিপ্ত হয়ে যান। অনেক বিলম্ব হয়ে যায়। ইতোমধ্যে আমি ঘুমিয়ে পড়ি। তিনি শীত অনুভব করে আমাকে বলেন, ‘এখানে এসো’। আমি বলি, ‘আমি ঋতুবতী।’
তিনি আমাকে আমার জানুর ওপর হতে কাপড় সরাতে বলেন। অতপর আমার উরু ও গণ্ড দেশের ওপর বক্ষ রেখে শুয়ে পড়েন। আমিও তাঁর ওপর ঝুঁকে পড়ি। ফলে ঠাণ্ডা কিছু প্রশমিত হয় এবং সেই গরমে তিনি ঘুমিয়ে যান।’

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা আরও বলেন, ‘আমি ঋতুস্রাব অবস্থায় প্রিয়নবির মাথা ধুয়ে দিতাম। তিনি আমার কোলে হেলান দিয়ে কুরআন মাজিদ তেলাওয়াত করতেন। আমি হাড় চুষতাম এবং তিনিও একই স্থানে মুখ দিয়ে তা চুষতেন। আমি পানি পান করে তাঁকে গ্লাস দিতাম এবং তিনিও ওখানেই মুখ দিয়ে ওই গ্লাস হতেই ওই একই পানি পান করতেন। সেই সময় আমি ঋতুবতী থাকতাম।

তিনি আরও বলেন, ‘আমার ঋতুর অবস্থায় আমি ও রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একই বিছানায় শয়ন করতাম। তাঁর কাপড়ের কোনো জায়গা খারাপ হলে তিনি শুধু ওইটুকু ধুয়ে ফেলতেন; শরীরের কোনো জায়গায় কিছু লাগলে ওই জায়গাটুকু ধুয়ে ফেলতেন এবং ওই কাপড়েই নামাজ পড়তেন।
পড়ুন- সুরা বাকারার ২২১ নং আয়াত-
পরিশেষে...
আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাদের স্ত্রীদের ঋতুস্রাবকালীন সময়ে তাদের সঙ্গে সহবাস ব্যতীত যাবতীয় জাগতিক কাজ-কর্মে সহযোগিতা ও পারস্পরিক সুসম্পর্ক বজায় রাখার তাওফিক দান করুন। অন্য ধর্মাবলম্বীদের মতো বাড়াবাড়ি ও ছাড়াছাড়ি থেকে উম্মতে মুসলিমাকে মুক্ত রাখুন। আমিন।

                OUR SOCIAL SITE

                   Like Facebook

                   Follow Twitter

  • 0Blogger Comment
  • Facebook Comment

Post a Comment

ads

Contact Form

Name

Email *

Message *

ads

Win 10.00$