মানুষ মরে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সকল আমল বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু মৃতব্যক্তি দুনিয়ায় এমন কিছু কাজ আছে যেগুলো করে যেতে পারলে কিয়ামত পর্যন্ত তার আমলনামায় সোওয়াব অব্যাহত থাকবে। তাই ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের অবশ্যই জেনে রাখা উচিত দুনিয়াতে কোন কাজ করে গেলে আখিরাতে সোওয়াব অব্যাহত থাকে। আসুন হাদীসের আলোকে সেগুলো জেনে নিই।
সু-সন্তান রেখে যাওয়া:
সু-সন্তান বলতে ঈমানদার সন্তান রেখে যাওয়া। যারা মাতা-পিতা বেঁচে থাকা অবস্থায় তাদের অনুগত যেমনটি ছিল, তাদের মৃত্যুর পরও তারা মাতা-পিতার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। আবু উমামাতা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করার পর ৪টি আমলের সওয়াব অব্যাহত থাকে- ১. যে ইসলামি রাষ্ট্রের সীমান্ত পাহারা দিল তার সওয়াব, ২. ভালো কাজ চালু করার ফলে তাকে যারা অনুসরণ করল তার সওয়াব, ৩. যে ব্যক্তি এমন সদকা করলো, যা প্রবাহমান থাকে তার সওয়াব, ও ৪. এমন নেক সন্তান রেখে যাওয়া- যে তার জন্য দোয়া করে। -মুসনাদ আহমাদ : ২২২৪৭
মসজিদ নির্মাণ ও কোরআনে কারিম বিতরণ করা:
কোরআনে কারিমে মসজিদকে হেদায়েতের কেন্দ্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। হাদিসে বলা হয়েছে, হজরত উসমান (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য মসজিদ তৈরি করল, আল্লাহ তার জন্য জান্নাতে অনুরূপ ঘর তৈরি করবেন। – সহিহ মুসলিম : ১২১৮
গাছ লাগানো
হজরত জাবির (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, কোনো মুসলিম যদি কোনো বৃক্ষরোপণ করে, আর তা থেকে কোনো ফল ব্যক্তি খায় তবে সেটি তার জন্য সদকা, কোনো হিংস্র প্রাণী খেলেও তা তার জন্য সদকা, যদি কেউ চুরি করে খায় তাও তার জন্য সদকা, কোনো পাখিও খায় তাও তার জন্য সেটি সদকা। এমনকি যদি কেউ তা কেটে ফেলে তাও সেটি তার জন্য সদকা। -সহিহ মুসলিম : ৪০৫০
অনুরূপভাবে কোনো ব্যক্তি যদি কোরআনে কারিম কোনো মসজিদ, মাদরাসা বা কোনো প্রতিষ্ঠানে বিতরণ করে, ওয়াকফ করে এবং সেগুলো পড়ে তবে তার সওয়াবের একটি অংশ সে পাবে। অন্য এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মানুষ মৃত্যুবরণ করার পর কবরে ৭টি আমলের সওয়াব অব্যাহত থাকে- ১. যে ইলম শিক্ষা দিল, ২. যে পানি প্রবাহিত করল, ৩. কূপ খনন করল, ৪. খেজুর গাছ লাগালো (গাছ রোপন), ৫. মসজিদ তৈরি করল, ৬. কোরআনে কারিম বিতরণ করল ও ৭. এমন নেক সন্তান রেখে গেল- যে তার জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করবে। -মুসনাদুল বাজ্জার :৭২৮৯
এছাড়া অভাবগ্রস্তদের জন্য ঘর তৈরি করে দেয়া, খাওয়ার পানির ব্যবস্থা করা, সীমান্ত রক্ষা করা, প্রবাহিত পানির ব্যবস্থা করা, আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়া দ্বীনী কিতাবাদী রচনা করা।
Post a Comment